নিজস্ব প্রতিবেদক
সারা দেশে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা উদযাপিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, সারা দেশে শান্তিপূর্ণভাবে অত্যন্ত আনন্দ উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্যে দিয়ে এবারের পূজা উদযাপিত হচ্ছে। সরকার সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। পুলিশ আনসারের পাশাপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
শনিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর তেজগাঁও থানাধীন বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওসমানী হল খেলার মাঠ সংলগ্ন পূজামণ্ডপ, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা পূজামণ্ডপ, বি জি প্রেস পূজামণ্ডপসহ বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা ও মতবিনিময়ের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
দুর্গাপূজার আনন্দকে আরও বেশি আনন্দময় ও উৎসবমুখর করতে বর্তমান সরকার প্রথমবারের মতো ছুটি বাড়িয়েছে বলে জানান নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা। এসময় উপদেষ্টা এবারের মতো আগামীতেও ছুটি বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশে কোনো ধর্মীয় বিভাজন নেই– উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের ছোট্ট একটি দেশ। আবহমানকাল ধরে আমরা সবাই ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে মিলেমিশে বসবাস করে আসছি।
ছোটবেলার পূজার স্মৃতিচারণ করে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, পূজার সময় সনাতন ধর্মাবলম্বী বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে বিভিন্ন উৎসবে আনন্দ উদযাপন ছিল উৎসবমুখর। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য সাম্প্রতিক সময়ে দুর্গোৎসব উদযাপন নিয়ে রাজনৈতিক কারণে গুজব বা আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার এবার দুর্গোৎসবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে, যাতে কেউ এখানে নাশকতা করার সাহস না পায়। তিনি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নির্বিঘ্নে দুর্গোৎসব উদযাপনের আহ্বান জানান।
৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, তবে সেটি শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপরই নয়, মুসলমানদেরও বাড়িঘর ভেঙেছে। আসলে একটি অস্বাভাবিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই এটি ঘটেছে। বিগত স্বৈরাচার সরকার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় প্রায় দুই হাজার মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছে। কে মুসলমান কে হিন্দু সেটি বিবেচনা করেনি।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে।
এম সাখাওয়াত হোসেন আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশে যেন কখনোই কেউ ধর্মীয় চর্চা বা ধর্মীয় স্বাধীনতায় বাধা দিতে না পারে এবং যারা এ কাজ করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি ধর্মীয় সম্প্রীতির নতুন বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
উপদেষ্টা আরও উল্লেখ করেন, ছাত্র-জনতার ওপর যখন গুলি চালানো হয়েছে তখন সে গুলি হিন্দু-মুসলমান ভাগ করেনি। যারা সেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে, ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়েছে তারাই নির্যাতিত হয়েছে। কোনো একটি সম্প্রদায় যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে অন্য সম্প্রদায়ের জন্য তা সুখকর হতে পারে না। বর্তমান সরকার বাংলাদেশের সব মানুষের জন্য। ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে সবাই গণঅভ্যুত্থানের সুফল পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এম সাখাওয়াত হোসেন।
পরিদর্শনকালে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের শিক্ষার্থী প্রতিনিধিসহ স্থানীয় সনাতন ধর্মের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।