নিজস্ব প্রতিবেদক
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, শিল্প-কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবে।
তিনি বলেন, ‘বাপেক্স সিলেটের জকিগঞ্জে একটি নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে। যা হবে দেশে ২৮তম গ্যাস ক্ষেত্র।
সোমাবার অনলাইনে জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস-২০২১ উপলক্ষে আয়োজিত ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জকিগঞ্জে নতুন আবিষ্কৃত নতুন পাওয়া গ্যাস স্তরে দৈনিক ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রবাহ পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্তরটিতে গ্যাস ইনিশিয়াললি ইন প্লেস বা জিআইআইপি ৬৮ বিলিয়ন ঘনফুট। ৭০ শতাংশ রিকভারি বিবেচনায় উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুদ ৪৮ বিলিয়ন ঘনফুট।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের জ্বালানি চাহিদা সামনে রেখেই কাজ করা হচ্ছে। সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জ্বালানি ব্যবস্থা ও ব্যবস্থাপনা সমৃদ্ধ করার লক্ষ্য নিয়েই গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রজ্ঞাবান ও বিচক্ষণ রাষ্ট্রনায়ক, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ১৯৭৫ সালের ৯ আগস্ট মাত্র ৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন পাউন্ড স্টার্লিং মূল্যে তিতাস, হবিগঞ্জ, রশিদপুর, কৈলাশটিলা বখরাবাদ-এই পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র বিদেশি কোম্পানি হতে ক্রয় করে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় আনেন।
উল্লেখিত ৫টি গ্যাস ক্ষেত্রের মজুদ ২০ দশমিক ৭৯ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। সর্বশেষ প্রাক্কলন অনুযায়ী সে সময় ৫টি গ্যাস ক্ষেত্রের উত্তোলনযোগ্য গ্যাস মজুদের পরিমাণ ছিল ১৫ দশমিক ৪৪ ট্রিলিয়ন ঘনফুট-যার বর্তমান সমন্বিত গড় বিক্রয় মূল্য প্রায় ৪৯ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
তিনি বলেন, এই গ্যাসের জন্যই শিল্প-কারখানা ও কর্মসংস্থান সম্প্রসারিত হয়েছে। এছাড়া ৪৬ বছর পরও এই ৫টি গ্যাস ক্ষেত্র মোট গ্যাস উৎপাদনের এক-তৃতীয়াংশ যোগান দিচ্ছে। অর্থাৎ জ্বালানি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অপরিসীম অবদান রেখে চলেছে।
বঙ্গবন্ধুর এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সিংগেল পয়েন্ট মুরিং, ইআরএল ইউনিট-২, এলএনজি টার্মিনাল, এলপিজি টার্মিনাল, তেল সঞ্চালন পাইপ লাইন, চলমান এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে জ্বালানি খাতে দৃশ্যমান পরিবর্তন পরিলক্ষিত হবে। এছাড়া অটোমেশন কার্যক্রম জ্বালানি খাতকে আন্তর্জাতিক মানের আধুনিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংযুক্ত করবে।
‘মুজিব বর্ষে- জ্বালানি খাত সমৃদ্ধিতে এগিয়ে যাক’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এ বছরের জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উদযাপিত হচ্ছে।
জ্বালানি নিরাপত্তা: আধুনিক প্রসঙ্গ, চ্যালেঞ্জ ও এগিয়ে যাওয়ার পথ’ শীর্ষক আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হাইড্রোকার্বন ইউনিটের মহাপরিচালক এ এস এম মঞ্জুরুল কাদের, প্যানালিস্ট হিসেবে ছিলেন অধ্যাপক ম তামিম, সাংবাদিক অরুণ কর্মকার, এনার্জি ও পাওয়ার ম্যাগাজিনের সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিছুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেগম ওয়াসিকা আয়েশা খান, এমপি বেগম নার্গিস রহমান, এমপি মোছা. খালেদা খানম, বিপিসির চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ ও পেট্টোবাংলার চেয়ারম্যান এ বি এম আব্দুল ফাত্তাহ সংযুক্ত থেকে বক্তব্য রাখেন।
বিএসডি/এমএম