নিজস্ব প্রতিবেদক:
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে আজ রোববার সকাল থেকে অস্থিরতা বিরাজ করছে শেয়ার লেনদেনে। বেশিরভাগ শেয়ার দর হারিয়ে কেনাবেচা হচ্ছে। মূল্য সূচকও ক্রমাগত হ্রাস-বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে চলছে।
দুপুর ১২টায় দিনের লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টা শেষে প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে ১২৬ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড দর বেড়ে কেনাবেচা হতে দেখা যায়। এ সময় দর হারিয়ে কেনাবেচা হচ্ছিল ১৯৮টি এবং দর অপরিবর্তিত অবস্থায় কেনাবেচা হচ্ছিল ৪৮টি।
বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমার পরও প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৫ পয়েন্ট বেড়ে ৭১১০ পয়েন্টে অবস্থান করতে দেখা গেছে। আজ সূচকটির যাত্রা শুরু হয়েছিল ৭১০৫ পয়েন্ট থেকে।
সকাল ১০টায় লেনদেনের শুরুতে সূকটি গত বৃহস্পতিবারের তুলনায় ২৮ পয়েন্ট বেড়ে ৭১৩৩ পয়েন্ট ছাড়িয়েছিল। কিন্তু পরের আধা ঘণ্টায় সেখান থেকে ৩৬ পয়েন্ট হারিয়ে ৭০৯৭ পয়েন্টে নামে।
শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, সূচক ৭০০০ পয়েন্ট পার করার পর থেকে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। গত সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবসেও সূচকের উত্থান-পতন ছিল। তবে বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারদর বৃদ্ধি সূচকের পতন ঠেকিয়ে রেখেছিল। আজ বেক্সিমকোর শেয়ার কিছুটা নিম্নমুখী।
তারা জানান, মূল্য সূচক নিজে চলে না। কেবল শেয়ারদরের ওঠানামায় সূচক বাড়ে বা কমে। কিন্তু বৃহৎ বাজার মূলধনী কোম্পানির শেয়ারদর ওঠানামা সূচকের ওঠানামাকে বেশি প্রভাবিত করে বলে কখনো সূচক বেড়ে গেলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ‘বাজার বাড়ছে’ এমন মনোস্তাত্তি¡ক ধারণা থেকে বেশি করে বিনিয়োগ করেন। তখন শেয়ারদর আরো বাড়ে। বিপরীতে যখন গুটিকয় বড় কোম্পানির শেয়ারের দর কমার কারণে সূচক নি¤œমুখী হলে দরপতনের ভয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কেনা কমিয়ে উল্টো বেশি বিক্রি করেন। তখন কারণ ছাড়াও অনেক শেয়ারের দর কমতে থাকে।
আজ দুপুর ১২টায় সূচকের পতন ঠেকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে বৃহৎ বাজার মূলধনী কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকোর শেয়ারদর বৃদ্ধি বড় ভ‚মিকা রাখছে। এ সময় কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ১২টা দরবৃদ্ধি সূচকে ১২ পয়েন্টের বেশি যোগ করে। একই সময় বেক্সিমকো ফার্মা, লিনডে বিডির দরবৃদ্ধিও সূচকের পতন ঠেকাতে কিছুটা সহায়তা করছে। বেক্সিমকো লিমিটেড কখনো সূচকে পয়েন্ট যোগ করছে, কখনো কমাচ্ছে। এ শেয়ারটি এক টাকা দরবৃদ্ধিতে ডিএসইএক্স সূচক এখন ২ পয়েন্টের বেশি ওঠানামা করে।
এদিকে মালিকানা বদলের খবরে ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার আজকের সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দর ২৩ টাকা ৯০ পয়সায় (প্রায় ১০ শতাংশ বেশিতে) কেনাবেচা হচ্ছে। দুপুর ১২টায় এ দরে কোম্পানিটির প্রায় ৪৪ লাখ শেয়ারের ক্রয় আদেশ ছিল। বিপরীতে ছিল না কোনো বিক্রির আদেশ।
এ সময় সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হচ্ছিল নতুন তালিকাভুক্ত ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স এবং এপেক্স ফুটওয়্যার কোম্পানির শেয়ার।
খাতওয়ারি শেয়ার লেনদেন পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টা শেষে শুধু বীমা খাতের অধিকাংশ শেয়ার দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছিল। খাতটির লেনদেনে আসা ৫২ কোম্পানির মধ্যে ৪৭টিই দর বেড়ে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে। গড়ে সব শেয়ার দেড় শতাংশ বেড়ে কেনাবেচা হতে দেখা যায়।
বিপরীতে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বস্ত্র, সিমেন্ট, প্রকৌশল খাতের অধিকাংশ শেয়ার দর হারিয়ে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টা শেষে ডিএসইতে সর্বাধিক ৫ শতাংশ দর হারিয়ে কেনাবেচা হচ্ছিল পদ্মা অয়েল, গোল্ডেন সন এবং তাল্লু স্পিনিং।
যথারীতি লেনদেনের শীর্ষে আছে বেক্সিমকো লিমিটেড। ১২টা পর্যন্ত এ কোম্পানির ৯৪ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। ২৮ কোটি টাকা করে লেনদেন নিয়ে এর পরের অবস্থানে ছিল সোনালী পেপার এবং বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন।
এ সময় পর্যন্ত ডিএসইতে মোট কেনাবেচা হয় ৬৯৫ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার।
বিএসডি/ এলএল