অনলাইন ডেস্ক
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেছেন, ডিজিটাল যুগে এক বছরের রিপোর্ট পরের বছর দেওয়া হয়। যেহেতু এবার ডিজিটাল পদ্ধতিতে ত্রৈমাসিকে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তথ্য প্রকাশ করা হবে, সেহেতু এই মাসের রিপোর্ট যেন পরের মাসে পাওয়া যায় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ডিজিটালি করা হলে অবশ্যই যেন সঙ্গে সঙ্গে রিপোর্ট পাওয়া যায়। এটাই আমার সতর্ক বার্তা।
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিং (জিডিপি ও বৈদেশিক বাণিজ্য) উইং ‘কোয়াটার্লি ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিং’ (কিউএসএ) শীর্ষক এক কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ বার্তা দেন প্রতিমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরীর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
ড. শামসুল আলম বলেন, আমাদের পাশ্ববর্তী দেশগুলো তিন মাস পরপর জিডিপির তথ্য দিয়ে থাকে। কাজটি দেরিতে হলেও আমরা করতে যাচ্ছি। বার্ষিক প্রাক্কলন তো আছেই তারপরও তিন মাস পরপর প্রবৃদ্ধির তথ্য পেলে জরুরি পদক্ষেপ নিতে সহজ হবে। অর্থনীতিকে বোঝা, জানা, নীতি গ্রহণ ও পদক্ষেপ নিতে ত্রৈমাসিক প্রবৃদ্ধির তথ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, তিন মাস পর জিডিপি প্রবৃদ্ধির তথ্য দিতে সরকার প্রধানের (প্রধানমন্ত্রী) কাছ থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। তিন মাস পরপর আমরা প্রবৃদ্ধির তথ্য দেব। আমরা এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় কাজ শুরু করে দিয়েছি। তিন মাস পর প্রবৃদ্ধির তথ্য পেলে আর্থিক স্বাস্থ্যের তথ্যও জানতে পারব।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সাধারণত বছরভিত্তিক মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির তথ্য দিয়ে থাকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। তবে এবার বছরে চার বার বা তিন মাস পরপর জিডিপি প্রবৃদ্ধি দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বিবিএস। পাশাপাশি জেলা, আঞ্চলিক জিডিপির হিসাবও দেবে বিবিএস।
বিবিএস জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা হিসেবে অফিসিয়াল পরিসংখ্যান প্রণয়ন ও প্রকাশ করে থাকে। বিবিএস জনশুমারি ও গৃহগণনা, কৃষিশুমারি ও অর্থনৈতিক শুমারি পরিচালনাসহ সব নমুনা জরিপ কার্যক্রমের দায়িত্ব নিরলসভাবে পালন করে যাচ্ছে। এছাড়া দেশের গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক নির্দেশক যেমন- জিডিপি, স্থুল ব্যয়যোগ্য জাতীয় (জিডিআই), স্থুল জাতীয় আয় (জিএনআই), সঞ্চয়, বিনিয়োগ, ভোগ প্রভৃতির নির্ভরযোগ্য হিসাব প্রণয়ন ও প্রকাশ করে থাকে।
বিবিএস প্রতি বছর মোট দেশজ উৎপাদন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার, মূল্যস্ফীতিসহ কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান প্রণয়ন ও প্রাক্কলন ও প্রকাশ করে থাকে। একটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা কেমন সে দেশের জিডিপি তথা জাতীয় আয়ের পরিমাণ থেকে ধারণা পাওয়া যায়। ১৯৭২-৭৩ সালকে ভিত্তি বছর ধরে বাংলাদেশে প্রথম জিডিপির প্রাক্কলন শুরু করা হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উচ্চতর ধারা বজায় রাখার পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর ভিত্তি করে দারিদ্র্য হ্রাসে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। বিবিএস স্বাধীনতার পর থেকে বার্ষিক জিডিপি সংকলন ও প্রকাশ করছে।
বর্তমানে সারাবিশ্বে ত্রৈমাসিক জিডিপির গুরুত্ব স্বীকৃত, সরকার তথা উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক তথ্য-উপাত্ত ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে তিন মাস পরপর জিডিপি প্রবৃদ্ধির চাহিদাও রয়েছে। ফলে সরকার ত্রৈমাসিক জিডিপি প্রাক্কলন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক হিসাবের একটি সমন্বিত ও সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যবস্থা যা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে উৎপাদনের সামগ্রিক ব্যবস্থা তুলে ধরার জন্য ডিজাইন করা হয়।
বিএসডি/এমএম