মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ৯ ডিসেম্বর সকালে সাহাবুল ইসলাম অপরিচিত তিন তরুণকে নিয়ে স্থানীয় এক অন্ধ মুদিদোকানির বাড়িতে যান। তাঁরা সবাই নিজেদের সাংবাদিক বলে পরিচয় দেন। ওই অন্ধ ব্যক্তির অসহায়ত্ব নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সরকারি সহায়তা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে তাঁরা ওই ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নিতে শুরু করেন। একপর্যায়ে ওই বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে সাহাবুল ওই ব্যক্তির মেয়ের ঘরে ঢোকেন।
এরপর সাহাবুল ঘরে থাকা ধারালো বঁটি দিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে ওই শিশুর ওপর যৌন নির্যাতন চালান। এ সময় ওই শিশুর চিৎকারে তার বাবা এগিয়ে এলে কথিত সাংবাদিকেরা মোটরসাইকেল নিয়ে সটকে পড়েন। পরে ওই শিশুর মা বাড়িতে ফিরে এলে তাঁকে বিষয়টি জানানো হয়। ওই শিশুর মা বিষয়টি আশপাশের লোকজনকেও জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরে আজ সকালে তিনি বড়াইগ্রাম থানায় মামলা করেন।
আজ দুপুরে বড়াইগ্রাম থানা চত্বরে ওই শিশু জানায়, কথিত ওই সাংবাদিক হঠাৎ করে ঘরে ঢুকে তাকে জাপটে ধরে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। এ সময় তাকে বঁটি দিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
ওই শিশুর বাবা বলেন, পাঁচ বছর ধরে তিনি দুই চোখেই দেখতে পান না। বাড়ির সামনে একটা মুদিদোকান করে কোনো রকমে সংসার চালান। তাঁর এ দুর্দশার কথা তুলে ধরবেন বলেই কয়েকজন সাংবাদিক তাঁর কাছে এসেছিলেন। তাঁর অন্ধত্বের সুযোগে মেয়েকে নির্যাতন করা হয়েছে বলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এদিকে ঘটনার পর থেকেই সাহাবুল ইসলামসহ মামলার অভিযুক্ত ব্যক্তিরা গা ঢাকা দিয়েছেন। তাই তাঁদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বড়াইগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। অভিযুক্ত তরুণদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
বড়াইগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রেসক্লাবের সদস্য নন। তাঁরা কোন গণমাধ্যমে কাজ করেন, তা–ও জানি না। তবে সবার কাছে নিজেদের অনলাইন সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিতেন বলে শুনেছি। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিলে সাংবাদিকদের কোনো আপত্তি থাকবে না।’
বড়াইগ্রাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম বলেন, ওই শিশুর মা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। মামলা গ্রহণের পর ওই শিশুকে বড়াইগ্রাম আমলি আদালতে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তাঁর জবানবন্দি গ্রহণ করা হবে।
বিএসডি/ এলএল