আগেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে বাংলাদেশের। কাগজে-কলমে কিছুটা আশা থাকলেও কার্যত বিদায় হয়ে যায় শ্রীলঙ্কারও। গতকাল দিল্লির অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে দুদলের ম্যাচটি বিশ্বকাপের জন্য নিয়মরক্ষার হলেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আশা বাঁচিয়ে রাখতে জয়টা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এমন ম্যাচেই এক আউটে হইচই পড়ে গেল বিশ্ব ক্রিকেটে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ১৪৬ বছরের ইতিহাসে প্রথম ব্যাটার হিসেবে টাইমড আউট হন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটিতে হেলমেট পরিবর্তন করতে গিয়ে সময়ক্ষেপণ করেন ম্যাথিউস। এরপর আম্পায়ারের কাছে আপিল করেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। যার ফলে প্রথমবারের মতো এই আউট দেখল ক্রিকেট বিশ্ব। অবশ্য নিয়মের মধ্যে থেকেই অধিনায়ক হিসেবে সাকিব আবেদন করেছেন।
এমসিসির আইনের ৪০.১.১ নম্বর ধারা অনুযায়ী, ‘একজন ব্যাটারের আউট হয়ে যাওয়া বা রিটায়ার্ড হার্টের পর যে ব্যাটসম্যান আসবেন, তাকে অথবা অন্য ব্যাটসম্যানকে ৩ মিনিটের মধ্যে বলের মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। অন্যথায় যে ব্যাটসম্যান নামছেন, তাকে আউট হতে হবে।’ অবশ্য বিশ্বকাপের প্লেয়িং কন্ডিশনে বলা আছে, এক্ষেত্রে সময়টা ২ মিনিট। ম্যাথিউস এদিন অতিক্রম করে গেছেন দুটিই। যার ফলে, বাংলাদেশের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে আউট দেন আম্পায়াররা।এদিন মাঠে আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলছিলেন সাকিব, আর তাই প্রথমে মনে হয়েছিল এটা তারই মস্তিষ্কপ্রসূত। ম্যাচ শেষে তিনি সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, তাকে আবেদন করতে উৎসাহিত করেছিলেন দলের এক ফিল্ডার। সাকিব বলেন, ‘আমাদের একজন ফিল্ডার আমার কাছে এসে বলল, যদি আমি আবেদন করি তাহলে (ম্যাথিউস) সে আউট হয়ে যাবে। এরপর আমি আবেদন করি এবং আম্পায়ার আমাকে জিজ্ঞেস করল আমি সিরিয়াস কি না। এটা নিয়মে আছে; জানি না সেটা ভুল নাকি সঠিক।’
অবশ্য কোন খেলোয়াড় আবেদন করার বুদ্ধি দিয়েছিল সেটি যদিও খোলাসা করেননি সাকিব। এমন প্রশ্নে টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘নাম বলা যাবে না’। তবে দেশের প্রথম সারির এক গণমাধ্যম দলীয় সূত্রে দাবি করেছে, সাকিবকে পরামর্শটা দিয়েছিলেন মূলত নাজমুল হোসেন শান্ত। পরে ব্যাট করতে নেমে যার সঙ্গে চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের সবচেয়ে বড় ১৬৯ রানের অনবদ্য জুটি গড়েন সাকিব। যদিও এটির সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।
সাকিবের মনে হচ্ছিল যেন তিনি যুদ্ধে আছেন, ‘মনে হচ্ছিল যেন যুদ্ধে আছি, তাই যা করার ছিল, সেটা করেছি আমি। এ নিয়ে বিতর্ক হবে। কিন্তু এটা যদি নিয়মে থাকে, আমি সেই সুযোগ নিতে পিছপা হব না। অবশ্যই এটা (টাইমড আউট) আমাদের সাহায্য করেছে সেটা অস্বীকার করবো না।’
অন্যদিকে, এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ম্যাথিউস। এমনকি প্রশ্ন তুললেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের কমনসেন্স নিয়েও। লঙ্কান এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মনে করেন সাকিবরা খেলাটাকে নিচে নামিয়েছে। ম্যাথিউস বলেন, ‘আমি ভুল কিছু করিনি। আমি যথাসময়েই মাঠে গিয়েছি। এটা হেলমেটের ভুল ছিল। আমি জানি না সাকিবের কমনসেন্স কোথায় গেল তখন, এটা সাকিব ও বাংলাদেশের কাছ থেকে অসম্মানজনক। তারা খেলাটাকে এতো নিচে নামাল। আইন অনুযায়ী আমি দুই মিনিটের মধ্যেই সেখানে ছিলাম।
বিএসডি / এলএম