জেলা প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিপক্ষে ভোট চাইলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী। সম্প্রতি জনৈক এক ব্যক্তির সাথে মুঠোফোনে কথোপকথনের অডিও ফাঁস হয়েছে। যেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
এরপর থেকে সাঈদ মেহেদীর বহিস্কার দাবি করেছেন সকল পর্যায়ের দলীয় নেতা-কর্মীরা। ওই কথপোকথনের একাংশে সাঈদ মেহেদী জনৈক ব্যক্তির সাথে বলেন, আমার চোখে ঘুম নেই। তারালি আর কুশুলিয়ায় আমার ভোট। পরিষদ যদি ভালোভাবে চালাতে না পারি তাহলে কাজ করতে কিভাবে। এ ভোটে তো শেখ হাসিনার কোন কিছু যাবে আসবে না। করজোরে মিনতি আর বসে থাইকেন না। এবাদুল সনাতন ধর্মলম্বীদের কোন ক্ষতি করবে না। সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন আমার বাহিরে জীবনেও যাবে না। কালিগঞ্জের ইউএনও আমার বাহিরে যাবে না। তাহলে আপনাদের চিন্তা কের। ওসি……. (খারাপ ভাষা) তারপরও ওসিকে আমি ভোটের আগে বলেছি আমি চেয়ারম্যানি করবো আমার কাজে ডিস্টার্ব করবেন না।
উপজেলা আওয়ামীলীগের বিশ্বস্ত সূত্র জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী একের পর এক বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে। সে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন সাতক্ষীরায় এক নারীর সাথে আটকের পর গণধোলাই খেয়ে দল থেকে বহিস্কার হয়। এরপর সেই বহিস্কার কাটিয়ে উঠে দলের নেতা-কর্মীদের ভুল বুঝিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। ওই পদে থাকা অবস্থায় দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিদ্রোহী হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে। এখন তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি। চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। সনাতন ধর্মালম্বীদের শ্মশান দখল থেকে শুরু করে একের পর এক বিতর্কের জন্ম দিয়ে যাচ্ছে।
নেতা-কর্মীরা আরও বলেন, আমামী ২৮ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যোগ্য প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। অথচ সাঈদ মেহেদী প্রকাশ্য দলের বিরোধীতা করছে। কয়েক দিন যাবত তিনি উপজেলার কুশুলিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে যেয়ে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট চাচ্ছে। তিনি প্রকাশ্য উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি, স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শেখ এবাদুলের পক্ষ নিয়েছে। এই এবাদুলের ছেলে লন্ডন প্রবাসী। সে লন্ডনে বসে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে। তারেক জিয়ার কাছের মানুষ এবাদুলের ছেলে নাসির উদ্দিন। কয়েক দিন আগে সাঈদ মেহেদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাস্টার নরীম আলী মুন্সি ও তার ছেলে মথুরেশপুর ইউপি’র চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ বাবুকে প্রকাশ্য জনসম্মুখে গালিগালাজ করেছে। মাইক্রোবাসস্ট্যান্ডে এক মাহফিলে দলীয় প্রার্থী ও নৌকা প্রতীক নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছে।
এছাড়া উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের। এমতাবস্থায় সাংগঠনিকভাবে অতিদ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তৃর্ণমূলসহ সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা। এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নৌকার পক্ষে কাজ করছি। কে বা কারা ভয়েজ এডিট করে আমাকে বিতর্কিত করার জন্য এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে।
বিএসডি/এসএফ