আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে গ্রেপ্তার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পিএচডি ডিগ্রি নিয়েও এবার প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই।
গবেষণার একাধিক শর্ত পূরণ না করলেও পার্থকে ডিগ্রি দেয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠার পর সিবিআইয়ের এই তদন্ত শুরু হয় বলে আনন্দ বাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন এই সাবেক শিল্প ও শিক্ষামন্ত্রী। তার সঙ্গে অর্থসংক্রান্ত ঘটনায় জড়িয়ে কারাগারে আছেন মডেল অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও।
সূত্র বলছে, উত্তরবঙ্গের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রার ছাড়া আর কারা পিএইচডি শেষ করানোয় সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেখানে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্যের ভূমিকাও তদন্ত করা হচ্ছে।
‘ট্রান্সফর্মিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি টু নলেজ ইকোনমি- দ্য রোল অব হিউম্যান রিসোর্স উইথ রেফারেন্স টু ইন্ডিয়া’ বিষয়ে পার্থ পিএইচডি ডিগ্রি পান ২০১৪ সালে। গবেষণার একাধিক ধাপের শর্ত পূরণ না করলেও তাকে এ ডিগ্রি দেওয়া হয় বলে প্রশ্ন উঠেছে।
ওই সময় যারা কলকাঠি নাড়েন বলে অভিযোগ, তাদের কেউ এসএসসি দুর্নীতিতে জড়িত কি না, সে বিষয়েও খোঁজ নিচ্ছে সিবিআই। সর্বশেষ বুধবার সুবীরেশকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
সিবিআই সূত্র বলছে, তদন্তকারীরা নথি খতিয়ে দেখেছেন এবং বেশ কিছু নথির প্রতিলিপি সংগ্রহ করেছেন। তার মধ্যে পার্থের পিএইচডি-সংক্রান্ত নথিও রয়েছে। পিএইচডির জন্য জমা দেয়া মার্কশিটের প্রতিলিপি থেকে শুরু করে রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, কোর্স ওয়ার্ক-এর নথি, মূল গবেষণাপত্রের অংশবিশেষের প্রতিলিপি নেয়া হয়। সে সব নিয়ে উপাচার্য কী জানেন, তা-ও জানতে চাওয়া হয়।
২০১২ সালে পিএইচডি করার জন্য রিসার্চ এলিজিবিলিটি টেস্ট দেন পার্থ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের দাবি, কোর্স ওয়ার্ক-এর জন্য ৭৫ শতাংশ হাজিরা বাধ্যতামূলক থাকলেও তিনি সব মিলিয়ে দুই দিন ক্লাস করেছিলেন। সে কথা তৎকালীন বিভাগীয় প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন বলেও দাবি।
পার্থকে কোর্স ওয়ার্ক-এর পরীক্ষায় বসতে দেয়ার ক্ষেত্রে এবং তার গবেষণাপত্র তৈরিতে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এ কাজে কলকাতা থেকে সমন্বয়ের কাজ করেছিলেন প্রশাসনিক পদে থাকা কিছু কলেজ শিক্ষক।
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত একটি মানি লন্ডারিং কেলেঙ্কারি মামলায় তদন্ত চালাচ্ছে দেশটির এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এরই মধ্যে ২৩ জুলাই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও সদ্যঃসাবেক শিল্পমন্ত্রী পার্থ এবং তার সহযোগী অর্পিতাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের আগের দিন অর্পিতার একটি ফ্ল্যাট থেকে ২১ কোটি রুপি এবং পরে আরেকটি ফ্ল্যাট থেকে ২৯ কোটি রুপি ও পাঁচ কেজি স্বর্ণের গহনা জব্দ করে ইডি। অর্পিতার দুই ফ্ল্যাট থেকে সব মিলিয়ে ৫০ কোটি রুপি জব্দ করা হয়।
এমন প্রেক্ষাপটে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেয়া হয়। তৃণমূল সভাপতি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পার্থর বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেন।
বিএসডি/এফএ