সাভার প্রতিনিধি: সাভারে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে এলপি গ্যাস বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ১২ কেজি সিলিন্ডারে দুই থেকে তিনশ’ এবং প্রতি ৩০ কেজি সিলিন্ডারে নয়শ’ থেকে এক হাজার টাকা করে বেশি গুণতে হচ্ছে গ্রাহকদের। এতে অনেক ক্রেতা হতাশা প্রকাশ করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় এই এলপি গ্যাসের মূল্য এখন লাগামহীন। সাভার ও আশুলিয়ার প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এলপি গ্যাস। এ বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন প্রতি ১২ কেজি এলপি গ্যাসের খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে দেয় ১ হাজার ৩৩ টাকা করে। কিন্তু বর্তমান বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ১৩শ’ টাকারও বেশি দামে। এতে করে সাধারণ গ্রাহকদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে এলপি গ্যাসের মূল্য। রান্নার কাজে সরকারি গ্যাসের বিকল্প এই এলপি গ্যাস যারা গ্রাহক পর্যন্ত পৌঁছে দেন, তারাই প্রতি ১২ কেজি গ্যাসের মূল্য রাখেন ১ হাজার ৬০ টাকা করে। এ গ্যাস বাসাবাড়ি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত পৌঁছতে খরচ বেড়ে গিয়ে পড়ে ১৩শ’ টাকারও বেশি। গৃহিনী ও ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, এলপি গ্যাসের জন্য খুচরা দোকানে গেলে প্রতি মাসেই বিভিন্ন অজুহাতে অতিরিক্ত টাকা রাখা হয়। আশুলিয়ার কাঁইচাবাড়ি এলাকার গৃহিনী আসমা আক্তার বলেন, করোনার সময় এলপি গ্যাসের মূল্য ছিল ১ হাজার ও ১১শ’ টাকা করে। এখন প্রতি ১২ কেজি সিলিন্ডার কিনতে হচ্ছে ১৩শ’ টাকা করে।
এরপরেও শ্রমিক খরচ আরো ৫০ টাকা অতিরিক্ত লেগে যায়। আশুলিয়ার বাইপাইল মোড়ের হোটেল ব্যবসায়ী মনির হোসেন ও আব্দুল মালেকসহ অনেকেই বলেন, প্রতি ৩০ কেজি এলপি গ্যাসের ক্রয়মূল্য ছিল ২২শ’ টাকা করে। এখন প্রতি সিলিন্ডারে ৯শ’ থেকে ১ হাজার টাকা অতিরিক্ত দিতে হয়। এতে করে আমরা ব্যবসায়ীকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। সেনা কল্যাণ সংস্থার ডিলারের ম্যানেজার মো. আতাউর রহমান বলেন, আমরা দোকানদারদের কাছে পাইকারি মূল্যেই ১২ কেজি গ্যাস বিক্রি করে থাকি ১ হাজার ৬০ টাকা করে। দোকানদার এর চেয়ে বেশি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন এটাই স্বাভাবিক। সাভারের রেডিও কলোনীর এলপি গ্যাস ডিলার মেসার্স হ্যাভেন এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. শফিউল্লাহ বলেন, এলপি গ্যাসের মূল্য সরকার নির্ধারিত মূল্যে কেনো বিক্রি করা যাচ্ছে না, এর অনেক কারণ রয়েছে। এই গ্যাস সিলিন্ডারগুলো ডিলার পর্যন্ত পৌঁছতেই অনেক বেশি খরচ লেগে যায়। যে কারণে গ্রাহকদের বেশি মূল্যে কিনতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনীয় এই এলপি গ্যাসের মূল্য প্রতি মাসেই ওঠানামা করছে। কিন্তু কখনও সরকার নির্ধারিত মূল্যে তা বিক্রি হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন সাধারণ গ্রাহকরা।
মূল্য নিয়ে হয়রানি এবং জীবনযাত্রার ব্যয় কমাতে সরকার এলপি গ্যাসের মূল্য নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে এমনটাই প্রত্যাশা করেছেন সাভার-আশুলিয়ার সচেতন মহলসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষ।
বিএসডি /ইয়াসিন / আইপি