সাভার প্রতিনিধিঃ
সাভারের বলিয়ারপুরে বামুনি খাল দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ কাজ কিছুতেই থামছে না। জমজম হাউজিং কোম্পানি রাত-দিন তাদের কাজ অব্যাহত রেখেছেন। জেলা প্রশাসন, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন পর্যায়ের তদন্ত কমিটি তাদের কি প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন তাও জানা যায়নি। অপরদিকে প্রশাসনের একাধিক সংস্থা যারা মানববন্ধন করেছেন খাল দখলের প্রতিবাদ করেছেন তাদেরকে ডেকে নিয়ে আন্দোলন না করার জন্য বলছেন। এ বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলেও খাল দখল এবং জমজম হাউজিং কোম্পানির নির্মাণ কার্যক্রম কিছুতেই থামছে না। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা বর্তমান সময় কে জানায়, শত বছরের ঐতিহ্যবাহী বামুনি খাল দখল করে সম্প্রতি জমজম হাউজিং কোম্পানি নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এ খাল দিয়ে এক সময়ে নানা ধরনের নৌযান চলাচল করত। গত বছরও বর্ষা মৌসুমে খাল দিয়ে নৌকা বেয়ে চলেছেন তারা। এ বছর বর্ষা মৌসুম শুরু হতে না হতেই জমজম হাউজিং কোম্পানির মালিক হাজী নুর মোহাম্মদ লোকজন নিয়ে খালটি ভরাট করেন। সে এখানে ইমারাত নির্মাণ করেন । এসময় তার উদ্যোগে খালের জায়গায় চান্দুলিয়ার কয়েক ব্যক্তির সহযোগিতায় মসজিদ নির্মাণ হচ্ছে। এ বিষয়টি দেখতে পেয়ে সম্প্রতি যাদুর চর, মধুর চর, মেইটকা, তেঁতুলঝোড়া, বলিয়ারপুর, চান্দুলিয়ার শত শত এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ করেন। তারা খালের নিকটে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধনে অংশ নেন। তাদের সমর্থনে সাভার পরিবেশ ও নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি ড. রফিকুল ইসলাম মোল্লাসহ কমিটির সদস্যগণ মানববন্ধনে অংশ নেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশের পর জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, ঢাকা জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত কমিটি গঠন করেন। জমজম হাউজিং কোম্পানি তাদের রেকর্ড পত্রে দেখান, বামুনি খাল তারা দখল করেনি। তাদের সীমানার ভেতরে এমন কোন খালের অস্তিত্ব নেই। এমনকি তাদের আরএস নকশা এবং বিআরএস নকশায় বামুনি খালের অস্তিত্ব নেই। এসময় তারা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হন। সিএস নকশায় খালটির অস্তিত্ব নেই। এসময় যাদুর চর এলাকার বাসিন্দা ও লন্ডন প্রবাসী সরকার তাসেক বর্তমান সময় কে জানান, সুবিধা নিয়ে চলমান ভূমি জরিপের কর্মকর্তা আকতার হোসেনসহ কয়েকজন কর্মকর্তা বিআরএস নকশায় খালের অস্তিত্ব দেখায়। ব্যক্তি মালিকানা সম্পত্তি বলে নতুন খতিয়ান খুলে জমজম হাউজিং কোম্পানিকে রেকর্ড প্রদান করেছেন তারা। যার ফলে আক্তার হোসেনকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। কিন্তু খতিয়ান পরিবর্তন করা হয়নি। এসএ নকশায় জালজালিয়াতি করা হয়েছে বলে তিনি জানান। এ বিষয়ে কথা বললে জেলা প্রশাসনের পক্ষে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল আমরা একাধিকবার পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি এখনও তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে। তিনি আরও জানান, খাল উদ্ধারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এদিকে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের একাধিক ব্যক্তিকে বিষয়টি নিয়ে ফোন করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
বিএসডি /আইপি