নিজস্ব প্রতিবেদক:
সুন্দরবন এলাকার চিহ্নিত হরিণ শিকারী চক্রের তিন সদস্যসহ ৪ জনকে আটক করেছে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের কৈখালী ষ্টেশনের বনকর্মীরা।
বুধবার রাত ৯টার দিকে শ্যামনগর উপজেলার ছোটভেটখালী সুন্দরবন বাজার এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। এসময় আটক হরিণ শিকারীদের নিকট থেকে হরিণের মাংসসহ তাদের ব্যবহৃত একটি মটর সাইকেল জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় সহকারী ষ্টেশন অফিসার মো. শাহাদাৎ হোসেন শিকার নিষিদ্ধ বণ্য প্রাণী আইনে ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
হরিণ শিকারী চক্রের সদস্যরা হলেন, শ্যামনগর উপজেলার মীরগাং গ্রামের আব্দুল জব্বার গাজীর ছেলে ইউনুস আলী (৪০), হরিনগর গ্রামের আফতাব সানার ছেলে আব্দুল মাজেদ (৪০), যতীন্দ্রনগর গ্রামের কওছার গাজীর ছেলে মো. ইদ্রিস আলী (৫০) ও মৃত বিনয়কৃষ্ণ মন্ডলের ছেলে পল্লী চিকিৎসক রবীন্দ্রনাথ মন্ডল (৪৫)।
বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ইউনুস ও তার দুই সঙ্গী বুধবার সুন্দরবনে প্রবেশ করে হরিণ শিকার করে। শিকারের পর হরিণ জবাই শেষে মাংস নিয়ে লোকালয়ে ফিরে আসে।
তারা আরও জানান, সেদিন রাত ৯টার দিকে শিকারী চক্রের ঐ তিন সদস্য আগে থেকে অর্ডার নেওয়া গন্তব্যে ওই মাংস পৌঁছে দেওয়ার জন্য রওনা হয়ে সুন্দরবন বাজার এলাকায় বনকর্মীদের সামনে পড়ে। এসময় টহলে থাকা বনবিভাগের সদস্যরা তাদেরকে বহনকারী মোটরসাইকেল দাঁড় করালে শিকার চক্রের সদস্যরা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তিন শিকারীসহ মটর সাইকেল চালক পল্লী চিকিৎসককে আটক করা হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ এলাকার চিহ্নিত হরিণ শিকারী ইউনুস ও তার কয়েক সহকর্মী দীর্ঘদিন ধরে হরিণ শিকারের সঙ্গে জড়িত। তারা স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর আগ্নেয়াস্ত্রসহ ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার করে সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকাসহ সাতক্ষীরা ও খুলনার বিভিন্ন গন্তব্যে পৌছে দেয়।
এদিকে মঞ্জুরী রাণী বিশ্বাস নিজেকে পল্লী চিকিৎসকের বোন পরিচয় দিয়ে জানান, বিজিবিতে কর্মরত তার বড় ভাইকে এগিয়ে আনতে যাওয়ার পথে ওই তিন ব্যক্তি বাজারে পৌঁছে দিতে তার ভাইকে অনুরোধ করেন। ঐ ঘটনার সঙ্গে জড়িত না হয়েও তার ভাইকে মামলায় আসামি করা হয়েছে বলে তার দাবি।
এ বিষয়ে মীরগাং টহল ফাঁড়ির ওসি শাহাদাৎ হোসেন জানান, আটককৃতদের বৃহস্পতিবার দুপুরে বন আইনের মামলায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এসময় শিকারী চক্রের নিকট থেকে জব্দকৃত মাংস কেরোসিন দিয়ে মাটিতে পুঁতে ফেলাসহ মোটরসাইকেলটি শ্যামনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিএসডি/ এলএল