স্পোর্টস ডেস্ক:
স্কটল্যান্ডের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রশংসা অনেকেই শুনেছেন। বিশালকায় পর্বতমালা ও উপত্যকা, প্রাসাদ, নান্দনিক সমুদ্রতীর, সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ শহর এবং বিচিত্র সব গ্রাম। কী নেই স্কটল্যান্ডে। পুরো বিশ্বজুড়েই সুনাম রয়েছে স্কটিশ উল ও মদের। গ্রেট ব্রিটেন দ্বীপের উত্তরদিকের এক তৃতীয়াংশ জুড়ে রয়েছে দেশটি। এখানে আছে ক্রিকেটও।
দক্ষিণে ইংল্যান্ডের সঙ্গে ৯৬ মাইল সীমানা আর বাকি তিনদিক সমুদ্র দিয়ে ঘেরা। ৭৭ হাজার ৯১০ বর্গকিলোমিটারের বিশাল দেশটিতে রয়েছে ৭৯০টি দ্বীপ। যেখানে আছে ক্রিকেটের চর্চা। ব্যাট ও বলের লড়াই। সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নেবে তারা। প্রথম পর্বের ‘বি’ গ্রুপে লড়বে বাংলাদেশের বিপক্ষেও।
বিগত কয়েক বছরে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে স্কটল্যান্ডের অবস্থান দেখলে হয়তো তাদের ক্রিকেটে নবীন ভাববেন অনেকেই। তবে তেমনটা ভাবলে অবশ্য ভুলই করবেন। অর্থনৈতিক ও প্রাকৃতিকভাবে বেশ সমৃদ্ধ দেশটির রয়েছে ২৩৬ বছরের দীর্ঘ ক্রিকেট ইতিহাস। ১৮ শতক থেকেই ক্রিকেটে পথচলা শুরু স্কটিশদের। ১৭৮৫ সালে ক্ল্যাকম্যানশায়ারের আলোয়ায় মাঠে গড়ায় তাদের ক্রিকেট ইতিহাসে ঠাঁই পাওয়া প্রথম ম্যাচ।
ক্লাবের ইতিহাস বিবেচনায়ও পিছিয়ে নেই স্কটল্যান্ড। যুক্তরাজ্যের সর্বাধিক প্রাচীন কিছু ক্লাবের শেকড়ের হদিস পাওয়া যায় এই দেশটিতেই। উনবিংশ শতকের শুরুর দিকেই বেশ কয়েকটি ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয় গায়েলিক ভাষায় আলবা নামে পরিচিত দেশটিতে। সর্বপ্রথম ১৮২১ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় কেলসো ক্রিকেট ক্লাব। নয়টি এফএ কাপ ফাইনাল খেলা কিংবদন্তি লর্ড কিনেয়ার্ড এর ৭ বছর পর ১৮২৮ সালে প্রতিষ্ঠা করে বসেন নিজের ক্রিকেট ক্লাব। রোসি প্রায়োরি নামে পথচলা শুরু করে ক্লাবটি।
উনবিংশ শতকের মাঝামাঝিতেই বেশ শক্ত অবস্থানে চলে যায় স্কটল্যান্ডের ক্রিকেট। শীর্ষ ক্লাবগুলো খেলোয়াড় তৈরির পাশাপাশি নিজেদের ভেতর ম্যাচ আয়োজন শুরু করে। বেশ কয়েকটি ঘরোয়া টুর্নামেন্টও শুরু হয় দেশটিতে। তেমনি একটি টুর্নামেন্ট ‘দ্য এগলিন্টন জাগ’ যেটি বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন আন্তঃক্লাব ক্রিকেট প্রতিযোগিতা।
সময়ের পরিক্রমায় ১৯৯৯ সালে সর্বপ্রথম ক্রিকেটের বিশ্ব দরবারে নিজেদের উপস্থাপন করে স্কটল্যান্ড। এর আগে ১৯৯৪ সালেই দেশটি লাভ করে আইসিসির সহযোগী সদস্যের মর্যাদা। ১৯৯৯ সালে নিজেদের প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলার পর ২০০৭ ও ২০১৫ বিশ্বকাপের মূল পর্বেও জায়গা করে নেয় তারা। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাট টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চেও স্কটল্যান্ডকে দেখা গেছে তিন বার। ২০০৭, ২০০৯ এবং ২০১৬তে অনুষ্ঠিত হওয়া তিন বিশ্বকাপে অংশ নেয় তারা।
আগামী ২৪ অক্টোবার থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও দেখা যেতে পারে স্কটল্যান্ডকে। টুর্নামেন্টের সুপার টুয়েলভে জায়গা পেতে আগামী ১৭ অক্টোবর থেকে প্রথম পর্বে লড়বে তারা। ব্যাটসম্যান কোয়ের্টজারের নেতৃত্বে মাঠে নামবে দলটি।
স্কটল্যান্ডের বিশ্বকাপ স্কোয়াড: কাইল কোয়ের্টজার (অধিনায়ক), রিচার্ড বেরিংটন (সহ-অধিনায়ক), ডিলান বাজ, ম্যাথু ক্রস (উইকেট-কিপার) , জশ ড্যাভি, আলসাদির ইভান্স, ক্রিস গ্রেইভস, ওলি হ্যারিস, মিচেল লিস্ক, কালুম ম্যাকলিওড, জর্জ মুনসে, সায়ইয়ান শরিফ, ক্রিস সোল, হামজা তাহির, ক্রেইগ ওয়ালেস (উইকেট-কিপার), মার্ক ওয়াট ও ব্রেড হোয়েল।