নিজস্ব প্রতিবেদক,
খাইরুল ইসলাম বাদশা। বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারীতে। পেশায় শিক্ষক ছিলেন। ছিলেন বলতে হচ্ছে এই কারণে যে এখন জীবনধারণের জন্য অন্য পেশা বেছে নিয়েছেন বাদশা। চায়ের দোকানই এখন তার আয় রোজগারের মূল উৎস।
মহামরি করোনার কারণে নিজ চেষ্টায় গড়ে তোলা তার স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। পাঁচ ছেলে-মেয়ে নিয়ে বিপদে পড়েন। সংসারের চাকা বন্ধ হওয়ার যোগাড় হয়েছিল। বাধ্য হয়েই পেশা বদলে ফেললেন। যে আঙিনায় কিছুদিন আগেও কোমলমতি শিশুদের জন্য পাঠশালা গড়েছিলেন, এখন সেখানেই চলছে তার চায়ের দোকান। সময়, পারিপার্শ্বিকতা এবং জীবন পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে তার জীবন চালচিত্র।
গিদারী ইউনিয়নের মহসিন আলী নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘স্কুলটিতে পড়ালেখার মান ভালো ছিলো। এ কারণে অনেক দূর থেকেও ছেলে-মেয়ে আসতো। আমার দুই মেয়েও এই স্কুলে পড়তো। খরচও তুলনামূলক কম ছিলো। কিন্তু এখন স্কুল বন্ধ। তাই মেয়েদের পড়ালেখাও আগের মতো হচ্ছে না।’
স্কুলের শিক্ষিকা হামিদা বেগম বলেন, ‘স্কুলের আয় দিয়ে আমার সংসার ভালোই চলছিলো। সেখানে আরও নয় জন শিক্ষক ছিলেন। সব মিলে আমরা ভালো ছিলাম। করোনা কারণে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। এ তো এক দুই মাস না। করোনার কারণে সব থেকে বিপদে পড়েছি আমরা। এখন ধার দেনা করে আর স্বামীর সামান্য আয়ে কোনো মতো সংসার চালিয়ে নিচ্ছি।’
খায়রুল ইসলাম বাদশা বলেন, ‘আর কতো টানা যায়। করোনা ও লকডাউনে আমার সব শেষ। জমি বিক্রি করে শিক্ষকদের বেতন পরিশোধ করে স্কুল বন্ধ করে দিয়েছি। স্কুল ঘরের দুই পাশের বেড়া খুলে চায়ের দোকান খুলে বসেছি। এখান থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে কোনো রকম সংসার চলছে।’
গাইবান্ধা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রাফিউল আলম বলেন, ‘করোনার কারণে অসংখ্য স্কুল ও কোচিং সেন্টার বন্ধ হয়ে গেছে। আমার এমন স্কুলের শিক্ষকদের জন্য সহায়তার হাত বাড়িয়েও দিচ্ছি।’
বিএসডি/আইপি