নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নম্বর টেম্পারিং এর অভিযোগ এনে বিভাগের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ফোকলোর বিভাগের স্নাতকোত্তর(২০১৮-২৮) শিক্ষাবর্ষের ৪ জন শিক্ষার্থী।
ফোকলোর বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ সাইফুল ইসলাম ও বিভাগের অন্য আরেক শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মেহেদী উল্লাহ বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়।
বুধবার (১৯ জুলাই) উপাচার্য বরাবর নিজেদের নাম, রোলসহ লিখিত অভিযোগ করেন নিপা পাল- (১৯১২৩২৫০৭), মৌ রাণী কর্মকার – (১৯১২৩২৫০২), সুমাইয়া নাসরীন – (১৯১২৩২৫০৮৪) এবং শাকিল – (১৯১২৩২৫৩৩)।
অভিযোগ পত্রে শিক্ষার্থীরা বলেন, “আমরা ফোকলোর বিভাগের ১ম ব্যাচের (২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ) স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর (২০১৮ ১৯ শিক্ষাবর্ষ) এর শিক্ষার্থী। সম্প্রতি আমাদের ২য় সেমিস্টার সহ স্নাতকোত্তরের সমন্বিত ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া কয়েকমাস আগে ১ম সেমিস্টারের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছিল। যেখানে আমাদেরকে ইচ্ছাকৃত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ৩.৫০ রাখা হয়নি। বিভাগের সভাপতি ড. মো. সাইফুল ইসলামের যোগসাজসে ড. মোহাম্মদ মেহেদী উল্লাহর কারসাজিতে আমাদের এই ফলাফল দেয়া হয়। ইতোপূর্বে ২০২০, সালের ফেব্রুয়ারিতে আমরা মেহেদী উল্লাহ স্যারের কোর্স না করা এবং পরীক্ষা কমিটির সকল কার্যক্রম থেকে তার সম্পৃক্ততা না থাকার আবেদন করেছিলাম। যার কপি উপাচার্য দপ্তর, ছাত্র পরামর্শ দপ্তর, রেজিস্টার দপ্তর ও বিভাগে জমা রয়েছে। তৎকালীন উপাচার্য বিষয়টি অবগত ছিলেন এবং প্রক্টর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান স্যারের মধ্যস্থতায় আমাদের দাবি পূরণে আশ্বস্ত হয়েছিলাম। পরীক্ষার খাতা না দেখা, কোন কোর্স না নেয়া, পরীক্ষা কমিটিতে না থাকা সহ বেশ কিছু দাবি মেনে নিয়েছিল বিভাগ, যা প্রক্টর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, তৎকালীন বিভাগের সভাপতি মো. বাকীবিল্লাহ, ড. আতিজা দীল আফরোজ অবগত রয়েছেন।”
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ এবার তিনি ২য় সেমিস্টারের পরীক্ষা কমিটিতে থেকে সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। বিগত আবেদন জমা দেয়ার পরিপ্রেক্ষিতে উনার ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার হয়েছে তারন। শুধু তাই নয়, অভিযুক্ত শিক্ষকের পছন্দের বিশেষ শিক্ষার্থীকে ভবিষ্যৎ, শিক্ষক নিয়োগের জন্য তিনি এ কাজটি করেছেন। তিনি ক্লাসসহ বিভিন্ন স্থানে যা নিজে বলে প্রচার করেন বলেও দবি তাদের। (উল্লেখ্য, পূর্বের অভিযোগপত্রটি বর্তমান আবেদনের সাথে সংযুক্তি করে দেয়া হয়) এছাড়া আশিকুর রহমান শাকিলের ফলাফল ২য় সেমিস্টারে অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে কিন্তু উক্ত বিষয়ের কোর্স ছিল। ১ম সেমিস্টারে। অথচ ১ম সেমিস্টারের প্রকাশিত ফলাফলে এই বিষয়ে কোনকিছু উল্লেখ করা হয়নি। এইসকল অন্যায় কেন করা হয়েছে সেই বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।
সেই সাথে ১ম সেমিস্টার ও ২য় সেমিস্টারের খাতা পুনর্মূল্যায়নের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পুনরায় খাতা মূল্যায়নের জন্য এবং তদন্ত কমিটি গঠন করে খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করারও দাবি জানিয়েছেন অভিযোগ আনয়নকারী ৪ শিক্ষার্থী।
অভিযোগকারী শিক্ষার্থী নিপা পাল বলেন, আমরা অভিযোগ করেছে উপাচার্য স্যার বরাবর এবং বিভাগের সকল শিক্ষকদের অবগত করেছি। এখন আমরা সত্য নাকি মিথ্যা বলেছি তা খাতা পুনরায় মূল্যায়ন করা হলেই প্রমাণিত হবে।
অভিযুক্ত শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ মেহেদী উল্লাহ বলেন, ২য় সেমিস্টারে আমার কোনো কোর্স ছিল না। আমি পরীক্ষা কমিটিতেও নেই। উদ্দেশ্যপ্রণীতভাবে আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে।
অভিযুক্ত আরেক শিক্ষক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ সাইফুল ইসলামের সাথে একাধিকবার ফোন দিয়ে যোগাযোগ এর চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বিএসডি/ এমআর