প্রযুক্তি ডেস্ক:
নতুন প্রযুক্তি আর ডিজাইনের স্মার্টফোন বাজারে আনতে প্রতিযোগিতা তুঙ্গে স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর। বাজার মাতিয়ে রেখেছে অ্যাপল, শাওমি, স্যামসাং। প্রতিটা কোম্পানি কিছুদিন পরপরই বাজারে আনছে ভিন্ন ধরনের স্মার্টফোন। স্যামসাংয়ের তো নিত্যনতুন প্রযুক্তি আর ডিজাইনে জুড়ি নেই।
এবার আকারে ছোট ফোন বাজারে আনতে যাচ্ছে স্যামসাং। ভবিষ্যতের স্যামসাংয়ের ফোল্ডিং স্মার্টফোন আনছে প্রতিষ্ঠানটি। নোট সিরিজের ডিভাইসের পরিবর্তে এবার ফোল্ডেবল স্মার্টফোন তৈরিতেই জোর দেবে স্যামসাং।
স্যামসাং ঘোষণা দেয়, চলতি মাসেই আসছে স্যামসাংয়ের ফোল্ডেবল স্মার্টফোন। ‘গ্যালাক্সি জেড ফোল্ড থ্রি ফাইভ জি’ স্মার্টফোনটি দেখতে ছোট্ট বইয়ের মতো। আরেকটি আসছে ‘গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ থ্রি ফাইভ জি’ ফোন। ডিজাইন করা হয়েছে ২০০০ সালের ফ্লিপ ফোনগুলোর আদলে। অন্যান্য স্মার্টফোনগুলোর চেয়ে এই দুটির দাম তুলনামূলক কম বলে জানায় স্যামসাং।
স্যামসাং কর্তৃপক্ষ বলছে, জেড ফোল্ড থ্রি আর জেড ফ্লিপ থ্রি হালকা, স্লিম আর বেশি টেকসই। পাশাপাশি আগের ফোল্ডিং মডেলগুলোর চেয়ে অনেক বেশি পানি সহনীয়। আগের মডেলগুলো ধুলা আর পানি সহনীয় ছিল না। নতুন ডিভাইসে আছে নতুন ফিচারও। আছে নোটের সিগনেচার এস পেন আর আন্ডার স্ক্রিন ক্যামেরা।
ঠিকই শুনেছেন, এই ফোনে ক্যামেরা স্ক্রিনের নিচেই আছে। মার্কেট রিসার্চ ফার্ম ক্যানালিস বলছে, এপ্রিল থেকে জুনে স্যামসাং মাত্র ২ লাখ ৫৭ হাজার ফোল্ডেবল ফোন শিপমেন্ট করেছে। যেখানে ফোল্ডেবল না এমন ফোনের শিপমেন্টের পরিমাণ ৫ কোটি ৮০ লাখ। সারাবিশ্বে চিপ সংকটের কারণে চলতি বছর নোট সিরিজের ফোন তৈরিতে্ও ভোগান্তিতে পড়তে হয় স্যামসাংকে।
স্যামসাংয়ের জেড ফোল্ড থ্রি সেটটি অন্যান্য ফোল্ডিং সেটের চেয়ে বেশি টেকসই। ৭.৬ ইঞ্চি ডিসপ্লে বানানো হয়েছে গরিলা গ্লাস দিয়ে। বাইরের অংশটা অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি, আগের ফোনগুলোর চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি টেকসই। তবে দামটাই একটু বেশি। ‘জেড ফোল্ড থ্রি’ র দাম পড়বে ১ হাজার ৭৯৯ ডলার। আগের মডেলগুলোর চেয়ে ২০০ ডলার কম।
যেখানে স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ২১ ফাইভজি’র দাম শুরু হয়েছে ৭৯৯ ডলার। গ্যালাক্সি নোট ২০ এর দাম শুরু হয়েছে ৯৯৯ ডলার থেকে। আর আইফোন ১২ প্রো’র দাম শুরু হয়েছে ৯৯৯ ডলার থেকে।
ক্রেতাদের জন্য স্যামসাং এবার একরকম ঝুঁকি নিয়েই মাঠে নেমেছে। ফোল্ডিং ফোনের পেছনে আছে তিনটি ক্যামেরা। একটা ওয়াইড অ্যাঙ্গেল, অন্যটি আল্ট্রা ওয়াইড অ্যাঙ্গেল আরেকটি টেলি ফোটো লেন্স। হিডেন ফ্রন্ট ক্যামেরা ডিসপ্লে’র নিচে আছে। ফোল্ড থ্রি’তে এস পেন ও সাপোর্ট করে।
ভিডিও কলের সময় নোট রাখা যাবে, ইমেইল চেক করা যাবে। কালো, সবুজ আর রুপালি এই তিন রংয়ে পাওয়া যাবে সেটগুলো। জেড ফ্লিপ থ্রি সেটও ফোল্ডেবল ডিসপ্লে সেট। এই ফোল্ডিং সেটগুলোতে ড্সিপ্লে দেখা খুব সহজ। ক্রিম, সবুজ, কালো আর ল্যাভেন্ডার রংয়ে পাওয়া যাবে এই মডেলের ফোন। দাম পড়বে ৯৯৯ ডলার। আগের বছর এই মডেলের অন্য ভার্সনের ফোনের দাম ছিলো ৪০০ ডলার। ফোল্ডিং থাকা অবস্থায় এই ফোনে ছবি তোলা যাবে, ভিডিও করা যাবে। দুটি ফোল্ডিং ফোনেরই পার্টনারশিপ আছে গুগল মাইক্রোসফটসহ অন্যান্য কোম্পানির সাথে।
বাজারে আরও এসেছে স্যামসাংয়ের স্মার্টওয়াচ। নতুন গ্যালাক্সি ওয়াচ ফোর আর গ্যালাক্সি ওয়াচ ফোর ক্লাসিক এই কোম্পানির প্রথম স্মার্টওয়াচ। স্মার্টওয়াচগুলো অনেক আধুনিক, ব্যাটারিও শক্তিশালী। ৩০ মিনিট চার্জ দিলে ১০ ঘন্টা চলে এই ঘড়ি। সাথে রক্তচাপ,শরীরে পানির পরিমাণ, স্থুলতা, মেটাবোলিক রেট সব তথ্যই দিতে পারবে এই স্মার্টওয়াচ। আপনি নাক ডাকছেন কিনা সে তথ্যও পাবেন এই স্মার্টওয়াচের কাছে।
গ্যালাক্সি ওয়াচ ফোরের ব্লুটুথ ভার্সনের দাম পড়বে ২৪৯ ডলার, এলটিই ভার্সনের দাম পড়বে ২৯৯ ডলার। ওয়াচ ফোর ক্লাসিকের ব্লুটুথ ভার্সনের দাম পড়বে ৩৪৯ ডলার। এলটিই মডেলের দাম পড়বে ৩৯৯ ডলার। স্মার্ট ঘড়িগুলো স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে তৈরি, রং আর আকার আছে দুটি।
বিএসডি/আইপি