বিশ্বকাপের আগে থেকেই ব্যাটিং নিয়ে ধুকছে বাংলাদেশ। যা সর্বশেষ এশিয়া কাপ ও দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ড সিরিজেও দেখা দিয়েছিল। সেই হতাশা তারা বিশ্বকাপেও টেনে নিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত চলতি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ২৫৬ রান। যদিও ভারতের বিপক্ষে সেই ম্যাচের শুরুটা ছিল তিনশ পেরোনো ইনিংস খেলার ইঙ্গিত। কিন্তু এমন পরিস্থিতিও কাজে লাগাতে না পারায় টাইগার ক্রিকেটারদের ‘পেশাদার মনোভাব’— এর অভাব দেখছেন টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট শ্রীধরন শ্রীরাম।
অথচ ম্যাচটিতে সেঞ্চুরি হাঁকানো বিরাট কোহলি বাংলাদেশের বোলারদের বিপক্ষে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলেননি। সে কারণে কোহলি থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের শেখা উচিৎ বলে মন্তব্য করেছেন শ্রীরাম। ভারতীয় এই ক্রিকেট পরামর্শক বলেন, ‘তামিম (তানজিদ) ও লিটন দাস দুজনেই অনেক হতাশ করেছে। ১৫ ওভারে ৯৩ রান করা অবস্থায় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোটাই বাংলাদেশের হাতে ছিল। কিন্তু সে অবস্থায় উইকেট দিয়ে আসা আসলেই হতাশার।’
বিশ্বকাপের শুরুর তিন ম্যাচে বাংলাদেশের ওপেনাররা যৌথভাবে ভালো করতে পারেননি। ভারত ম্যাচে তারা প্রথম সেই ‘অসম্ভব’কে সম্ভব করে তোলেন। লিটন ৬৬ এবং তামিমের ব্যাট থেকে আসে ৫১ রান। তারা ফিরে যাওয়ার পর মিডল অর্ডারে চূড়ান্ত ব্যর্থ ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদী মিরাজ ও তাওহীদ হৃদয়রা। ফলে ম্যাচের মোমেন্টাম ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষদিকে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের প্রচেষ্টায় কোনোমতে তারা আড়াইশ’র কোঠা পেরোয়।
কিন্তু ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে সেই রান জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। ভারতীয় ওপেনাররাই সেটি হাতের নাগালে নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে চলতি বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরি পূর্ণ করে বাকি কাজ সারেন কোহলি। যা ভারতকে এনে দেয় ৭ উইকেটের বড় জয়। অবশ্য এমন হারের জন্য অধিনায়ক শান্তও লিটনের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসাকে দায়ী করেন। পরবর্তীতে একই সুরে কথা বলেছেন শ্রীরামও।
টাইগারদের এই পরামর্শক বলেন, ‘এটি ভালো দৃষ্টান্ত, তাই না? ৭০-৮০ রান করার আগপর্যন্ত কোনো বলেই উড়িয়ে মারা চিন্তাও করেননি কোহলি। এটি আমাদের ছেলেদের জন্য অবশ্যই শিক্ষণীয়। উইকেটে বল ফেলে রান নেওয়া এবং ফাঁকা জায়গা খুঁজে নিয়ে খেলার চূড়ান্ত পেশাদারীত্ব দেখিয়েছেন কোহলি। তার থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের শেখা উচিৎ।’
এ নিয়ে বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিক হারের স্বাদ পেয়েছে সাকিব আল হাসানের দল। তবে এখনও জয়ের ধারায় ফেরার উপায় খুঁজতে বললেন শ্রীরাম, ‘আমার মতে বিশ্বকাপ দীর্ঘ সময়ের টুর্নামেন্ট এবং প্রতিটি হারই যন্ত্রণার। তবে প্রত্যাবর্তনের জন্য উপায় খুঁজতে হবে। পরবর্তী ম্যাচে যেন তারা জিততে পারে সেদিকে ফোকাস করা উচিৎ।’
আগামী ২৪ অক্টোবর মুম্বাইয়ের ওয়ানখেড়ে স্টেডিয়ামে নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে একাদশে ফিরতে পারেন টাইগারদের নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ভারতের বিপক্ষে উরুর ইনজুরিতে থাকা বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের অনুপস্থিতিতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
বিএসডি / এলএম