নিজস্ব প্রতিবেদক
সরকারি নিয়ন্ত্রণে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হ্রাস পাওয়াই ছিল জুলাই আন্দোলনের অন্যতম পটভূমি— এমনটাই বার্তা দেওয়া হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে। এতে বলা হয়, প্রশ্ন নয়, প্রশংসা করতে এসেছি— এই ধরনের পরিবেশ তৈরি করে রাখা হয়েছিল সাংবাদিকদের জন্য। যারা ব্যতিক্রম হয়ে প্রকৃত সাংবাদিকতা করার চেষ্টা করেছিলেন, তাদের ওপর নেমে এসেছিল দমন-পীড়ন।
রোববার (৬ জুলাই) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড পেজে প্রতীকী দুটি ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে এসব লেখা হয়।
প্রতীকী পোস্টার একটিতে দেখা যায়, হাসিনার মিডিয়া— এই শিরোনামে পোস্টারের বাঁদিকে একটি বিশাল তেলের বোতল এবং ওপরে কলের মুখ থেকে তেল পড়ার চিত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এই অংশটি মূলত প্রতীকীভাবে দেখাতে চেয়েছে, কীভাবে গণমাধ্যমকে তেলবাজি বা চাটুকারিতার একধরনের বাণিজ্যে পরিণত করা হয়েছিল। সাংবাদিকতা নয়, বরং শাসককে খুশি রাখাই হয়ে উঠেছিল অনেক প্রতিষ্ঠানের কাজ।
অন্যদিকে আরেক পোস্টারের ডান পাশে ছিল রক্তাক্ত এক সাংবাদিকের ছবি, যার প্রেস কার্ড স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। নিচে লেখা—FREEDOM UNDER HASINA। এই অংশটি দেখাতে চায়, প্রশ্ন করার সাহস দেখালে কী পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে সাংবাদিকদের। আন্দোলন কাভার করতে গিয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা, আহত হওয়ার বাস্তবতা এবং সরকারের কঠোর দমননীতির সরাসরি চিত্র এটি।
ক্যাপশনে বলা হয়, যেসব কারণে জুলাই অনিবার্য হয়ে উঠেছিল, তার মধ্যে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়াও ছিল অন্যতম। আর চাটুকারিতার বেষ্টনী তৈরি করে স্বৈরতন্ত্রকে রক্ষা করাই ছিল তখনকার রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রধান কাজ।
‘জুলাই প্রিলিউড সিরিজ’-এর ৯ এবং ১০ নম্বর পোস্টার চিত্রায়নে উঠে এসেছে গণমাধ্যমের পরাধীনতা ও প্রশ্নহীন পরিবেশের করুণ চিত্র। এসব পোস্টার এঁকেছেন শিল্পী দেবাশিস চক্রবর্তী, যিনি জুলাই ২০২৪-এ রাজপথে সক্রিয় এক সাংস্কৃতিক কর্মী ছিলেন। এখন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে তিনি জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে পোস্টারগুলো ডিজাইন করছেন।
প্রধান উপদেষ্টার অফিস সূত্রে জানা যায়, জুলাই প্রিলিউড সিরিজ-এর এই পোস্টারগুলো পর্যায়ক্রমে প্রকাশ করা হবে, যাতে পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়— জুলাই শুধুই একটি সময় ছিল না, এটি ছিল শোষণ ও নীরবতার বিরুদ্ধে এক অনিবার্য প্রতিক্রিয়া।
এর আগে শনিবার প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড পেজ থেকে জুলাই স্মৃতি উদযাপন অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট তুলে ধরতে চারটি নতুন পোস্টার প্রকাশ করা হয়।
ওই পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়, আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই, আমি আসছি মানুষকে দিতে- মুখে এই কথা বলে বলে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ফেনা তুলে ফেললেও ভেতরের চিত্র কী ছিল এটা এখন উন্মোচিত। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় লাগামহীন এবং অবিশ্বাস্য স্কেলের এই লুটপাট আওয়ামী লীগ আমলের এক বড় নির্দেশক। শিল্পী দেবাশিস চক্রবর্তী জুলাই প্রিলিউড সিরিজের ৫ থেকে ৮ নম্বর পোস্টার এঁকেছেন এই লুটপাটকে থিম করে।