ক্রীড়া ডেস্ক,
এক বছর আগেও বড় মঞ্চের বোলার ছিলেন না নাসুম আহমেদ। বাঁহাতি এ স্পিনারের আন্তর্জাতিক অভিষেকই হয়েছে এ বছর নিউজিল্যান্ডে টি২০ সংস্করণে। যে দলের বিপক্ষে খেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারের স্বীকৃতি পেলেন, সেই কিউইদের বিপক্ষেই সেরা বোলিং করলেন গতকাল। ৪ ওভারে দুটি মেডেনসহ ১০ রান খরচায় পেলেন ৪ উইকেট। এ পরিসংখ্যানই বলে দেয় কতটা ভালো বোলিং করেছেন নাসুম। বাঁহাতি এ স্পিনারের উন্নতির গ্রাফটা ক্রমেই উন্নতির পথে। মূলত সতীর্থদের সমর্থন ভালো বোলিং করতে আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে তাকে। গতকাল ম্যাচ শেষে জানালেন সিনিয়রদের সমর্থন কতটা বদলে দিয়েছে তাকে।
কিউই কন্ডিশনে কারও অভিষেক মানে লাইফ সাপোর্ট জ্যাকেট ছাড়া সমুদ্রে ফেলে দেওয়ার মতো। বাংলাদেশ থেকে গিয়ে সেই বিপরীত কন্ডিশনেও নিজেকে ভালোভাবেই মেলে ধরেছিলেন নাসুম। নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক টি২০ ম্যাচে দুটি উইকেট পেলেও হারের আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল সেদিন। গতকাল স্মৃতি রোমন্থন করে বাঁহাতি এ স্পিনার বলেন, ‘প্রথম ম্যাচে ২ উইকেট পেলেও একটা আক্ষেপ ছিল; ওদের সঙ্গে জিততে পারিনি। এবার হোম কন্ডিশনে আমরা সিরিজ জিতেছি। প্রথম দুটি জেতার পর আজ চার নম্বর ম্যাচে এসে সিরিজ জিতলাম। অনুভূতি বলতে, খুব ভালো লাগছে আর খুব খুশিও লাগছে নিজে পারফর্ম করায়।’
একটা সময় সাকিব থাকলে সীমিত ওভারের ম্যাচে দ্বিতীয় বাঁহাতি স্পিনারের সুযোগ তেমন একটা হতো না। দুই সিরিজ ধরে সাকিবের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে খেলছেন নাসুম। সিনিয়রের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পারফর্মও করছেন তিনি। দিন দিন দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে উঠছেন নাসুম, ‘আসলে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়েছি কিনা জানি না। তবে দল থেকে অনেক সমর্থন পাচ্ছি। বিশেষ করে অধিনায়ক ও অভিজ্ঞরা আমাকে অনেক সমর্থন করছেন। এতে আমার আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাচ্ছে। কোচও (রঙ্গনা হেরাথ) আমাকে নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে কাজ করেন। তার সঙ্গে আমি অনেক কিছু শেয়ার করি। তিনিও আমার সঙ্গে অনেক কিছু শেয়ার করেন। কাল অনুশীলনে কোচ বলেছিলেন, এ উইকেটে আরেকটু আস্তে বল করলে ভালো হয়। কাল (মঙ্গলবার) ওটাই অনুশীলন করছিলাম আর আজ (গতকাল) ওটা ম্যাচে প্রয়োগ করার চেষ্টা করেছি।’
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মুশফিকুর রহিমের সতীর্থ ছিলেন নাসুম। বোলিংয়ে সামান্য ভুল করায় অধিনায়কের রোষে পড়েছিলেন লিগে। বল হাতে তার দিকে তেড়ে গিয়েছিলেন মুশফিক। সেদিন আতঙ্কে কুঁকড়ে যাওয়া নাসুম আজ মুশফিকের জাতীয় দলের সতীর্থ। ভালো করায় মুশফিকের কাছ থেকেও বাহবা পাচ্ছেন তিনি। বোলিং ইউনিটের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে ওঠা নাসুম শোনালেন আত্মবিশ্বাসের কথা, ‘সবচেয়ে বড় কথা আমরা ম্যাচ জিতেছি। আর ম্যাচ জিতলে এমনিতেই আত্মবিশ্বাস উঁচুতে থাকে। আমরা ম্যাচ জিতে যাচ্ছি, বিশ্বকাপে অবশ্যই আমাদের আত্মবিশ্বাস হাই থাকবে। আমার বিশ্বাস, আমরা অনেক ভালো করব।’
২৬ বছর বয়সী এ স্পিনার মনে করেন, পেশাদার ক্রিকেটারকে সব কন্ডিশনে মানিয়ে নিতে হয়, ‘পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে আমাকে যে কোনো উইকেটেই বল করতে হবে। ফ্ল্যাট হোক বা টার্নিং হোক, ভালো করতে এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী বল করে যেতে হবে। কোন জায়গায় কেমন উইকেট হবে আগে থেকে জানা থাকে না। তাই আমার চেষ্টা থাকে সেরাটা দিয়ে ভালো করা।’
বিএসডি/এএ