নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর:
নারীর ইতিবাচক পরিবর্তনের পাশাপাশি সমাজের ভেতরে মূল্যবোধের অবক্ষয় বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ রংপুর জেলা নেতৃবৃন্দ। পরিষদ নেতাদের দাবি, গত বছরের মার্চ থেকে এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত তরুণ সমাজের অনেক ইতিবাচক কাজের পাশাপাশি কিছু নেতিবাচক প্রবণতা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। মূল্যবোধের অবক্ষয়ে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ, ধর্ষণের পর হত্যা করার মতো ঘটনা অব্যাহতভাবে ঘটে চলেছে। যা উদ্বেগজনক।
বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে রংপুর নগরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে উদ্বেগের এ কথা জানান বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের রংপুর জেলা সভাপতি হাসনা চৌধুরী। আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উদযাপন উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
পরিষদ নেতৃবৃন্দ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে একটি ধর্মীয় উগ্রবাদী সম্প্রদায় নানা অপতৎপরতা চালিয়ে সমাজকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। সমাজের মধ্যে সাধারণ মানুষ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও নারীরা নিরাপত্তাহীনতার পাশাপাশি প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। যা বর্তমান সমাজসহ নারী আন্দোলনকে উদ্বিগ্ন করে তুলছে।
মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদের সংরক্ষিত ১৩টি সংবাদপত্রের উদ্ধুতি দিয়ে দাবি করা হয়, ২০২০ সালে দেশে ৩ হাজার ৪৪০ জন নারী ও কন্যা শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ১ হাজার ৭৪ জন ধর্ষণ, ২৩৬ জন গণধর্ষণ ও ৩৩ জন ধর্ষণের পর হত্যা এবং ৩ জন ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র আত্মহত্যা করেছেন। নারীর প্রতি এ সহিংসতা বন্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান ও ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান থাকার পরও শুধু সচেতনতার অভাব এবং মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে এ ধরনের ঘটনা বাড়ছে।
সম্মেলনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ মনে করে বর্তমান পরিস্থিতিতে গণসচেতনতা বৃদ্ধি এবং মনস্তাত্বিক পরিবর্তন ও বৈষম্যমূলক আইন, নীতি, প্রথা পরিবর্তন সাপেক্ষে সমতাভিত্তিক সমাজ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা জরুরি। এ লক্ষ্যে সম্মিলিতভাবে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সঙ্গে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাতার আন্দোলনও গড়ে তোলার বিকল্প নেই। এসময় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ হিসেবে রংপুরে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করে মহিলা পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের রংপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুম্মানা জামান। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিষদের সহ-সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা চৌধুরী প্রমুখ।