নিজস্ব প্রতিবেদক,
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমামের ৮৭তম জন্মদিন মঙ্গলবার। ১৯৩৫ সালের এই দিনে ভারতের বর্ধমানে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। শৈশব সেখানেই কাটে। ১৯৫০ সালে কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠানের এক নাটিকায় অংশ নেওয়ার মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু হয় তার।
বর্ধমান টাউন স্কুলে শুরু হয় তার শিক্ষাজীবন। ১৯৬০ সালে তিনি চলচ্চিত্রে এবং ১৯৬৪ সালে টেলিভিশনে অভিনয় শুরু করেন। তার প্রথম দিকের ছবির মধ্যে রাজা এলো শহরে, শীত বিকেল, জানাজানি, ধারাপাত ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ১৯৬৫ সালে সমগ্র পাকিস্তানের চলচ্চিত্র উৎসবে হাসান ইমাম শ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মান লাভ করেন।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের এ শিল্পী সভাপতি হিসেবে দীর্ঘসময় বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৬৪ সালের সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী আন্দোলনের সংগঠক ছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে নানা জায়গায় গিয়েছেন, সাংস্কৃতিক চেতনার উদ্বোধন ঘটিয়ে সম্প্রীতি ও মৈত্রী স্থাপনের কাজ করেছেন। উনসত্তরের গণআন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধ তার জীবনের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় জহির রায়হানকে সভাপতি ও হাসান ইমামকে সাধারণ সম্পাদক করে মুজিব নগরে চলচ্চিত্র শিল্পী ও কলাকুশলী সমিতি গঠন করা হয়, যাদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র দলিল ‘লেট দেয়ার বি লাইট’ নির্মিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠায় হাসান ইমাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
শহীদজননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটির অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব তিনি। জাহানারা ইমামের মৃত্যুর পর আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন হাসান ইমাম। শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ও শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার ছাড়াও স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদকসহ অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন এই প্রথিতযশা।
বিএসডি/আইপি