বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কঠোর হুশিয়ারি ইবি ছাত্রশিবিরের

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মু. মাহমুদুল হাসান বলেছেন, আজকে ৯৩ দিন হয়ে যাচ্ছে কিন্তু এখনো পর্যন্ত সাজিদের খুনিদেরকে বের করা যায় নাই। এটা শুধু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যর্থতা নয়, এটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যর্থতা। আপনাদের ইনটেলিজেন্স কি এত দুর্বল হয়েছে? ৯০ দিন হয়ে গেল একজনের হত্যাকারীকে এখনো আপনারা বের করতে পারছেন না। এর পেছনে কি রহস্য, যা জাতির সামনে উন্মুক্ত করতে হবে। হত্যাকারীদেরকে দ্রুত গ্রেফতার ও বিচার করা না হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করে দেওয়া হবে।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুর ১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা প্রাঙ্গণে ছাত্রসমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
মাহমুদুল হাসান বলেন, ছাত্র সংসদ চালু বিষয়ে আমাদেরকে শুধু হচ্ছে সাতপাঁচ বোঝানো হয়েছে। আর কত সময় নিবেন? আপনাদেরকে বলতে চাই, যদি ছাত্র সংসদ নিয়ে কোনো তালবাহানা চলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তার দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবে ইনশাআল্লাহ।
ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমের জন্য আল্টিমেটাম দিয়ে তিনি বলেন, আমরা কয়েকটা ব্যাংকের হেড অফিসে কথা বলেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যদি সদিচ্ছা থাকে তাহলে মাত্র ২১ দিন এই পেমেন্ট সিস্টেমকে ডিজিটাল করতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন তারা। শুধুমাত্র সাত দিন হাতে গুনে সময় দিচ্ছি। এর মধ্যে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ পেমেন্ট সিস্টেমের ব্যাপারে গ্রহণ করা না হলে, বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করে দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি, ট্রেজারারকে আর অফিস করতে দেওয়া হবে না।
আবাসন নিশ্চিতের দাবিতে তিনি বলন, আট বছর হয়ে যাচ্ছে শুধু হলের নির্মাণ কাজ। এই বছর আপনারা সবগুলো হলের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে শিক্ষার্থীদের হাতে হলগুলো বুঝিয়ে দিতে হবে এবং হলের সিট অবশ্যই মেধাভিত্তিক সিট দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। প্রতি হলে আবাসন নিশ্চিত করবে প্রশাসন। এটাই প্রশাসনের নীতি হওয়া দরকার।
মাহমুদুল হাসান বলেন, একটা মহল নতুন করে আবার আওয়ামী স্টাইলে র্যাগিং কালচার চালু করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। নতুন করে আবার গেস্টরুম কালচার চালু করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। এজন্য প্রশাসন তাদেরকে সহযোগিতা করছেন। আমরা আপনাদেরকে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, আওয়ামী ক্যাডারদের যদি আবার হলগুলোকে সন্ত্রাসীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় শিক্ষার্থীরা তা প্রতিহত করবে এবং কখনো আর সন্ত্রাসীদের হাতে হলগুলোকে তুলে দেওয়ার সুযোগ দেবো না।
স্বচ্ছ শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক ডিপার্টমেন্টের আছে যেখানে ব্যাচ সংখ্যা অনেক কিন্তু শিক্ষক মাত্র দুইজন বা তিনজন। স্বচ্ছ শিক্ষক, স্বচ্ছতা ও মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। যারা সত্যিকারের মানুষ তাদেরকে আমরা শিক্ষক হিসেবে চাই। যারা আমাদেরকে আগামী দিনে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠন করবার জন্য সোনার মানুষ হিসেবে তৈরি করতে পারবে, তাদেরকে আমরা শিক্ষক হিসেবে চাই।
তিনি আরও বলেন, অনেকে সাবধান হয়ে যেতে বলছে আবার কেউ বলছে সাবধান-সাবধান। আপনাদেরকে আমরা বলতে চাই, যে মিছিলের ব্যানার ধরেছে শহীদ আমিনুর রহমান, শহীদ মহসীন কবীর, শহীদ জহিরুল ইসলাম, ওয়ালীউল্লাহ মুকাদ্দাস সেই মিছিলের কর্মীদের সাবধান হওয়ার কিছুই নাই। আমরা শাহাদাৎ বরণ করতে চাই। আমাদের শপথ শাহাদাৎ সুতরাং পৃথিবীর কোনো শক্তি আমাদের কর্মীদেরকে ভয় দেখাতে পারবে না। আপনারা সতর্ক হোন অন্যথায় শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে নিশ্চিহ্ন হবেন।
উল্লেখ্য, এসময় শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মু. ইউসুব আলী, অফিস সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাফি, অর্থ সম্পাদক শেখ আল আমিন, প্রচার সম্পাদক আবসার নবী হামজা, দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক হাসানুল বান্না অলি-সহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এনআই















