পিতার কোলে ফিরল অপহৃত ৩ বছরের রোহিঙ্গা শিশু

কক্সবাজারের উখিয়ার ৪নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাড়ির আঙিনায় খেলার সময় অপহৃত হয় তিন বছরের রোহিঙ্গা শিশু মোহাম্মদ ইছা। গত শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে নিখোঁজ হওয়ার পর শিশুটির পরিবার দুশ্চিন্তায় পড়ে। একই দিন অজ্ঞাত নম্বর থেকে ফোন করে অপহরণকারীরা দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
ঘটনার পর ক্যাম্প প্রশাসনের সহায়তায় নিখোঁজের দুই দিন পর উখিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ইছার পিতা মোহাম্মদ আমির আলী। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে চট্টগ্রামের চন্দনাইশে অপহরণকারীদের অবস্থান শনাক্ত হলে উখিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক সংশ্লিষ্ট থানায় অধিযাচন পত্র পাঠান।
বার্তা পেয়ে চন্দনাইশ থানা পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার অভিযানে নামে। টানা একদিনের চেষ্টার পর সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে দোহাজারী এলাকা থেকে মুক্তিপণ ছাড়াই অক্ষত অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
চন্দনাইশ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সরওয়ার বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী মুক্তিপণের টাকা নিতে অপহরণকারীকে আসতে বলা হয়। নির্দিষ্ট স্থানে আসার পর পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারী ইছাকে ফেলে পালিয়ে যায়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে সোমবার বিকেলে শিশুটিকে উখিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়।
উখিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক বলেন, দুই থানার সমন্বিত প্রচেষ্টায় শিশুটিকে বড় ধরনের ক্ষতি ছাড়াই উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি এবং এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে উখিয়ার ৪নং ক্যাম্পের বি ব্লকের শেডে গিয়ে দেখা যায়, পিতা-মাতার সঙ্গে ইছার খুনসুটি চলছে। পরিবার জানায়, মানসিকভাবে কিছুটা আঘাত পেলেও শিশুটির শারীরিক অবস্থা ভালো আছে।
পুত্রকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আপ্লুত পিতা আমির আলী বলেন, আমি ভাবিনি আমার ছেলেকে আবার পাবো। সে আমার কোলে ফিরে এসেছে, এর চেয়ে বড় আনন্দ কিছু নেই। উখিয়া ও চন্দনাইশ থানার ওসি স্যাররা অনেক কষ্ট করেছেন, তারা না থাকলে কী হতো জানি না।
সাম্প্রতিক সময়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও উখিয়া-টেকনাফ সংলগ্ন এলাকায় শিশু অপহরণের ঘটনা বেড়েছে। স্থানীয়দের মতে, দুই থানার কর্মকর্তাদের মতো প্রশাসন ও পুলিশ আন্তরিকভাবে কাজ করলে অপহরণকারীদের দৌরাত্ম্য কমিয়ে এ ধরনের ঘটনায় প্রাণহানি রোধ করা সম্ভব।












